কালী তত্ত্বের উৎস



 বেদের রাত্রি সূক্তই পরবর্তীকালে কালীর ধারার সৃষ্টি করেছে। শতপথ ব্রাহ্মনে ও ঐতরেয় ব্রাহ্মনে নির্ঋত দেবীর উল্লেখ পাওয়া যায়।
বৈদিক সাহিত্যে কালীর নাম প্রথম পাই মুন্ডক উপনিষদে। সেখানে কালী যজ্ঞাগ্নির সপ্তজিহবার একটি। এখানে কালী আহুতি গ্রহণকারিনী অগ্নিজিহবা মাত্র। মহাভারতের সৌপ্তিক পর্বে দেখা যায় অশ্বত্থামা যখন পান্ডব শিবিরে গিয়ে নিদ্রিত বীরগণকে হত্যা করছিলেন তখন হন্যমান বীরগণ ভয়ংকরী কালীমূর্তি দেখতে পেয়েছিলেন। কালি দাসের ‘‘কুমার মম্ভব’’ -এ মহাদেবের বিবাহ প্রসঙ্গে
বরযাত্রার বর্ণনায় মার্তৃগনের সাথে মহাদেবের বিবাহযাত্রায় কালী অনুগমন করেছিলেন। মার্কন্ডেয় চন্ডীতে চন্ডমুন্ড এবং তাঁদের অনুচরেরা দেবীর নিকটবর্তী হলে দেবী অত্যন্ত কোপ প্রকাশ করলেন। তাঁর ভ্রুকুটি কুটিল ললাট থেকে অসি পাশ ধারিণী করাল বদনাকালী আবির্ভূত হন।
☞ কালী বিলাসতন্ত্রে বলা হয়েছে –
"কার্ত্তিকে কৃষ্ণ পক্ষে তু পক্ষদশ্যাং মহানিশি।
আবির্ভূতা মহাকালী যোগিনী কোটি ভিঃ সহা।।"
অর্থাৎঃ কার্ত্তিক মাসের অমাবস্যার মহানিশিতে মহাদেবীর এই ভূ-মন্ডলে আবির্ভাব। এটাই তার আবির্ভাব তিথি। এদিন দীপাবলী বা দীপদান তথা দেওয়ালী রজনী। কার্ত্তিক অমাবস্যার রাতে দীপদানে আলোক মালায় প্রজ্জ্বলিত করে নিজেদের অন্ধকার থেকে আলোকে নিয়ে যাওয়ারই নামান্তর দীপাবলী। আলোর মাধ্যমে শক্তি সাধনায় নিজেকে পুণ্যালোকে আলোকময় করে তোলাই জগতের মূলে শক্তি সাধনার অন্তনির্হিত তাৎপর্য্যের সার্থকতা।
☞ বৃহদারণ্যক উপনিষদে আমাদের অসৎ হতে সৎ -এ নিয়ে যাওয়ার জন্য, অন্ধকার থেকে আলোতে এবং মৃত্যু থেকে অমৃতত্বে যাওয়ার জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে। পরলোকগত স্বজন ও বন্ধুগণ যাতে ঐ সব ভয়ঙ্কর অন্ধকার অতিক্রম করে গন্তব্য স্থল অমৃতধামে যেতে পারেন। 

No comments:

Post a Comment