দশমহাবিদ্যা দেবীমূর্ত্তি দর্শনঃ-
সর্ব্বানন্দ পূর্ব্ব হইতেই ভৃত্য পূর্ণানন্দকে বড় ভাল বাসিতেন, 'পূণাদাদা, বলিয়া ডাকিতেন । বাড়ি আসিয়া এ সমস্ত বিবরণ পূনাদাদাকে জানাইলে, তিনি ঐ মন্ত্র অভ্যাস করিতে বলিলেন । একদা পৌষ সংক্রান্তির নিশীথ সময়ে পূর্ণানন্দ প্রভুপুত্র সর্ব্বানন্দকে লইয়া মাতঙ্গ মুনির আশ্রমে জীনবৃক্ষের নিন্মে আসিয়া, সর্ব্বানন্দকে সাহস প্রদান করিয়া বলিলেন, বৎস ! তুমি কিছু মাত্র ভয় করিও না আমি এখানে শুইয়া থাকি, তুমি আমার পৃষ্টদেশে আসীন হইয়া, একাগ্রচিত্তে সেই মন্ত্র জপ করিতে থাক । দেবীর সাক্ষাৎ লাভ হইলে, যখন তিনি বর দিতে উত্যত হইবেন, সে সময় তুমি বলিও হে মাতাঃ ! কি বর গ্রহণ করিব আমি অবগত নহি, কেন না আমি ভৃত্যের আজ্ঞানুবর্ত্তী । এই কথা বলিয়াই ভৃত্যশ্রেষ্ট পূর্ণানন্দ যোগবলে দেহ হইতে প্রাণ বিমুক্ত করিয়া নিরালম্বে অবস্থিত রহিলেন । সর্ব্বানন্দ দেব পূণা দাদার পৃষ্ঠোপরি আসীন হইয়া একমনে মন্ত্রাধিষ্ঠাত্রী দেবীমূর্ত্তির ধ্যান করিতে লাগিলেন । কিয়ৎকাল পরে সমাধিমগ্ন সর্ব্বানন্দের হৃদ্কমল হইতে সূর্য্যসঙ্কাশ সুমহান্ তেজ নির্গত হইয়া সমস্ত বনভূমি ব্যাপ্ত হইল এবং সেই তেজোরাশির মধ্য হইতে দেবীমূর্ত্তি আবির্ভূতা হইয়া সর্ব্বানন্দকে বলিলেন, বৎস ! বর গ্রহণ কর । সর্ব্বানন্দ দেবীবাক্য শ্রবণে চক্ষুরুন্মিলন পূর্ব্বক গুরুমন্ত্রোপদিষ্ট হৃদয়াধিষ্ঠাত্রী দেবীমূর্ত্তিকে সন্মুক্ষে দর্শন করিয়া কৃত কৃতার্থ হইলেন । তাহার সমস্ত মূর্খতা দূর হইয়া গেল । তিনি এক নতুন জীবন প্রাপ্ত হইলেন । সমগ্র শাস্রই তাঁহার জিহ্বাগ্রে প্রতিভাত হইতে লাগিল ; তিনি নানাবিধ প্রকারে দেবীর স্তুতি করিলেন । দেবী সন্তুষ্টা হইয়া বলিলেন, "আমি তোমাকে পুত্রস্থানীয় করিলাম, অতঃপর তুমি যাহা কর্ত্তব্য মনে করিবে তৎসমস্তই ফলপ্রদ হইবে" । সর্ব্বানন্দ বলিলেন, 'হে মাতঃ ! ব্রক্ষা, বিষ্ণু, মহেশ্বরাদির চিরবাঞ্চিত অতি গূহ্য তোমার অভয় পদ যখন দর্শন করিয়াছি, তখন আমার সমস্তই সফল হইয়াছে । আমার অন্য বরের প্রয়োজন কি ? আমি আর কি বর প্রার্থনা করিব ? তবে একান্তই যদি কোন বর দিতে ইচ্ছা করেন, তাহা আমি জানি না, আমার সন্মুখে যে নিদ্রিত দাস সেই আমার অপর বর, তাহার প্রার্থিত বর প্রদান করুন।" তখন ভগবতী আদ্যাশক্তি পূর্ণানন্দের মস্তকে পদার্পণ করিয়া বলিলেন, হে পূর্ণানন্দ ! তুমি মুক্ত হইয়াছ । যোগনিদ্রা পরিহারপূর্ব্বক উঠ এবং আমার পরম পদ দর্শন করিয়া অভীষ্ট বর গ্রহণ কর । পূর্ণানন্দ দেবীর পাদপদ্মস্পর্শে সচেতন হইয়া অনেক স্তব করিয়াছিলেন ; এবং , দেবী দশবিদ্যারুপ প্রদর্শনের প্রার্থনা করিলে, দেবী দশবিদ্যারুপ প্রদর্শন করিয়াছিলেন
ঁমায়ের দশ রূপের নামঃ ১) কালী (১ম সিদ্ধবিদ্যা) ২) তারা (২য় সিদ্ধবিদ্যা) ৩) ষোড়শী (৩য় সিদ্ধবিদ্যা) ৪) ভুবনেশ্বরী (৪র্থ সিদ্ধবিদ্যা) ৫) ভৈরবী (৫ম সিদ্ধবিদ্যা) ৬) ছিন্নমস্তা (৬ষ্ঠ সিদ্ধবিদ্যা) ৭) ধূমাবতী (৭ম সিদ্ধবিদ্যা) 8) বগলা (৮ম সিদ্ধবিদ্যা) ৯) মাতঙ্গী (৯ম সিদ্ধবিদ্যা) ১০) কমলা (১০ম সিদ্ধবিদ্যা)